বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
দুর্নীতির অভিযোগ

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার পদ ছাড়তে হলো ড. ইফফাত জাহানকে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   156 বার পঠিত

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার পদ ছাড়তে হলো ড. ইফফাত জাহানকে

অবশেষে দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার পদ ছাড়তে হলো ড. ইফফাত জাহানকে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ঘনিষ্ট বান্ধবী হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার পদ বাগিয়ে নেন ইফফাত জাহান। আওয়ামী সরকারের সকল অপকর্মের অন্যতম ভাগিদার তোফায়েল আহমেদের চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল মোল্লার স্ত্রী ও কুখ্যাত আব্দুল কুদ্দুস মাখনের শ্যালিকাও তিনি। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা-দক্ষতা না থাকলেও এসব পরিচয় ব্যবহার করে এতদিন ট্রেজারারের মতো গুরুত্বপূর্ণ এই পদটি দখল করে ছিলেন। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও অদৃশ্য খুটির জোরে বহাল তবিয়তে থেকে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টিই নিজের দখলে নিতে নানামুখী ষড়যন্ত্র চালা”িছলেন ইফফাত।

ট্রেজারার হিসেবে আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল রক্ষায় কাজ করার কথা থাকলেও উল্টো সেই তহবিল লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, অর্থ বিভাগের পরিচালকসহ একদল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সিন্ডিকেট বানিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির কোটি কোটি টাকা নিজে যেমন আত্মসাৎ করেছেন; তেমনি সুযোগ করে দিয়েছেন অন্যদেরকেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে গাড়ি ক্রয়, মেইনটেন্যান্স ও জ্বালানি ক্রয়; সিকিউরিটি গার্ড ও ক্লিনিং সার্ভিস, ক্যাফেটেরিয়া ভাড়া, বিভিন্ন অফিসের সাজসজ্জা, আসবাবপত্র ক্রয়, বিভিন্ন গবেষণাগারের সামগ্রী ক্রয়, সরকারের ট্যাক্স ও ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে নানা জালিয়াতির মাধ্যমে এসব অর্থ হাতিয়েছে ইফফাত জাহানের সিন্ডিকেট। ফলে প্রায় তহবিল শূন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি বলতে গেলে এখন তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। বিপুল ঋণের চাপে বিঘ্নিত হ”েছ স্বাভাবিক কার্যক্রম। অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষক, কর্মচারীরা একদিকে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন, অন্যদিকে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরাও।

শেখ রেহানার আশীর্বাদপুষ্ট ইফফাত জাহানের সব দুর্নীতির ইতিহাস ইউজিসি, শিক্ষা-মন্ত্রণালয় ও দুদকসহ সরকারের সং¯’াগুলোকে বার বার জানানো হলেও আওয়ামী অনুসারী ও শেখ রেহানার বান্ধবী হওয়ায় তিনি বরাবরই থেকে গেছেন ধরা ছোঁয়ার অন্তরালে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইফফাত জাহানের ভয়াল থাবায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন অস্তিত্ব সংকটে।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে উৎকণ্ঠিত অভিভাবকরা। ইফফাত জাহান সিন্ডিকেটের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বাঁচাতে ও এই দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের আইনের আওতায় আনতে ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন। প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির অভ্যন্তরীণ এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনেও এই বিস্তর লুটপাট, অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তদন্ত কমিটি, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দুদকে দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৩৩ এর ৩ ধারা অনুযায়ী; ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন, আর্থিক ব্যব¯’াপনা ও শৃঙ্খলা এবং হিসাবের জন্য দায়ী থাকিবেন। কিš‘ ট্রেজারার ড. ইফফাত জাহান এই আইনের তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন থেকে বিরত থেকে ই”েছমত নিজে অর্থ আত্মসাত করেছেন এবং সহযোগীদেরও সুযোগ করে দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ¯’ায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ নিয়েও হয়েছে পুকুরচুরি। কোনো দরপত্র আহ্বান ছাড়াই অবৈধভাবে ইনফিকম এসএ কনস্ট্রাকশন বাংলাদেশ নামের ভুঁইফোঁড় এক প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ¯’ায়ী ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণে ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার কাজ দিয়েছেন ট্রেজারার ইফফাত জাহান। বোর্ড অব ট্রাস্টির কোন অনুমোদন না নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শুধুমাত্র নোট পাস করে কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে এই কাজের চুক্তি করেছেন তিনি। ভবন নির্মাণ কাজে এ যাবত দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকা চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হলেও কাজ এগিয়েছে মাত্র ৩৮.৯২ ভাগ। প্রতি বর্গ ফিটে নির্মাণ বাবদ তারা প্রায় ৪৩০০ টাকা বিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে ইনফিকমকে যে অর্থ প্রদান করেছে তা কাজের অগ্রগতির সাথে সামঞ্জস্য নয়। এ কাজের সকল অতিরিক্ত খরচের বিল ভাউচারের অনুমোদন দিয়ে অর্থ ছাড় করেছেন ইফফাত জাহান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ট্রেজারার হিসেবে যোগদানের পর থেকে কখনোই সময় মত অফিসে আসেন নি ইফফাত জাহান। অনুমোদনহীন ছুটি কাটানো তার সহজাত অভ্যাস। তার কাছে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) এ ব্যপারে মৌখিকভাবে জানতে চাইলে তার একটাই জবাব ছিলো, ‘আমাকে আওয়ামী লীগের অফিসে নিয়মিত যেতে হয়, কাজেই আমার পক্ষে নিয়মিত অফিস করা বা অফিসে নিয়মিত আসা সম্ভব নয়।’ তার এ ধরনের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে প্রাইম এশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিভাগ তার কর্মকালীন দুই মাসের একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে প্র¯‘ত করে। যে প্রতিবেদনে তার অননুমোদিত ছুটি ও বিলম্বে অফিসে আসার বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তার এসব কর্মকান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকে ব্যহত করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে,ইফফাত জাহানের অধীন¯’ ফাইন্যান্স ডিরেক্টর শিপার আহমেদ অ্যাডমিশন থেকে মোট ৭১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বিভিন্ন সময়ে স্লিপের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর টিমের সদস্য, ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও রেজিস্ট্রার দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে ইফফাত জাহান নিশ্চুপ থেকে শিপার আহমেদকে এ কাজে সহায়তা করেন। শুধু তাই নয় তিনি শিপার আহমেদকে কোনরূপ এইচ আর পলিসির তোয়াক্কা না করে ৭ লাখ টাকা বেতনের বিপরীতে লোন প্রদান করেন।

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকিউরিটি গার্ড সার্ভিস ও ক্লিনিং সার্ভিসের নামে ব্যাপক দুর্নীতি করেন ট্রেজারার ইফফাত জাহান। যে দুটি কোম্পানি এই কাজ পেয়েছে, সেগুলো তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান রায়হান আজাদ টিটুর নিজস্ব কোম্পানি। কোন রকম টেন্ডারের তোয়াক্কা না করে ট্রেজারার অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে কোম্পানিগুলোকে মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকা বিল প্রদান করে। যার একটি বড় অংশ ট্রেজারার ইফফাত জাহান ও ভাইস চেয়ারম্যান টিটু ভাগাভাগি করে নেয়। প্রকৃত হিসাব নিয়ে দেখা যায় সিকিউরিটি গার্ড সার্ভিস ও ক্লিনিং সার্ভিস বাবদ মাসে ৫ লাখ এর বেশি ব্যয় হওয়ার সুযোগ নেই। এভাবে সিকিউরিটি গার্ড সার্ভিস ও ক্লিনিং সার্ভিস বাবদ অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে তিনি বছরে প্রায় ৮৪ লাখ টাকা অবৈধ উপার্জনের ব্যব¯’া পাকা করেন।

ওই প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে,ইফফাত জাহান প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচ বি আর টাওয়ারের নিচে একটি ক্যাফেটেরিয়া ভাড়া দেন বাড়ির মালিককের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে। বিষয়টি ভবন মালিকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি দফায় দফায় চিঠি দিয়ে অবৈধভাবে তার অনুমতি ব্যতিরেকে এ ধরণের ক্যাফেটেরিয়া ভাড়া না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ট্রেজারার যে ¯’ানে ক্যাফেটেরিয়াটিকে ভাড়া দেন তার ভাড়া আনুমানিক কয়েক লক্ষ টাকা হলেও তিনি মাত্র ১০ হাজার টাকায় ভাড়া দেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ওই জায়গায় তিনি প্রকৃতপক্ষে মোট ৪ টি দোকানকে ভাড়া দিয়েছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে ইফাফাত জাহান ৪টি দোকান থেকে নিজে কয়েক লাখ টাকা মাসে উপার্জন করেন। এসব দোকানের মালিক ভাইস চেয়ারম্যান রায়হান আজাদ টিটুর স্ত্রী ও শ্যালক। শুধু তাই নয় এই ৪টি দোকানের বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল ভাড়াটিয়ারা পরিশোধ না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রদান করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস বিভাগের হিসাবে দেখা যায় এ যাবত ইউটিলিটি বিল বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৫ কোটি টাকা গ”চা দিয়েছে। রায়হান আজাদ টিটুর যোগসাজশে মাসে কয়েক লাখ টাকা উপার্জনের লোভে ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাড়ে এ বিপুল পরিমাণ অর্থের বোঝা চাপিয়ে দেন।

প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সময় প্রত্যেক ছাত্র/ছাত্রীকে উপহার হিসেবে ব্যাগ প্রদান করে থাকে। ট্রেজারার ইফফাত জাহান এ খাতে অর্থ চুরির নতুন পš’া আবিষ্কার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ১০০০ পিস স্টুডেন্ট ব্যাগ ক্রয় করতে ট্রেজারার ওয়ার্কঅর্ডার প্রদান করেন এবং বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার অ্যাডভান্স টাকা প্রদান করেন। কিন্ত বাস্তবে কোন ব্যাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোরে জমা হয় নাই। এভাবেই তিনি স্টুডেন্ট ব্যাগ ক্রয়ের সম্পূর্ণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ধারা ৪৫ এর ২ অনুযায়ী, ট্রেজারার প্রতিবছর অডিটেড ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট ইউজিসিতে প্রদান করার কথা থাকলেও তিনি তার সময়ে যথাক্রমে ২০১৮ – ২০১৯, ২০১৯ – ২০২০, ২০২০ – ২০২১, ২০২১ – ২০২২, ২০২২ – ২০২৩, ২০২৩ – ২০২৪ সালে তা প্রদান করা থেকে বিরত থাকেন, যা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র গাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ট্রেজারার ইফফাত জাহান জালিয়াতির আশ্রয় নেন। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গাড়ি (নিশান এক্স-ট্রায়াল) ক্রয় করে আদিয়ান ট্রেডার্স হতে কিš‘ দেখানো হয় গাড়িটির প্রকৃত মালিক নুসরাত ট্রেডিং। প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নুসরাত ট্রেডিংকে গাড়ী ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আদিয়ান ট্রেডার্সকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডিশনাল মূল্য বাবদ ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করে। অর্থাৎ গাড়ি ক্রয় বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় ১২ লাখ টাকা ইফফাত জাহান অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেন।
ইফফাৎ জাহানের লুটপাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ¯’ায়ী ক্যাম্পাসের দুটি ভবনের প্রায় ৫ কোটি টাকা ভাড়া বকেয়া রয়েছে। চার মাস সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা/কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী এ সকল কাজের সম্পূর্ণ দায়ভার ট্রেজারার ইফফাত জাহানের।

অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ট্রেজারার হিসাবে ইফফাত জাহানের বড় দায়িত্ব ছিল আয়কর রির্টান জমা দেয়া কিš‘ তিনি ২০১৭ থেকে ২০১৮ এবং ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা না দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। সেই সাথে সরকারের ট্যাক্স ও ভ্যাট বাবদ প্রায় ৯.৮৮ কোটি টাকা প্রদান না করে তিনি আত্মসাৎ করেন।
পারসেজ কমিটির মেম্বারদের স্বাক্ষর দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। কিš‘ বাস্তবে উক্ত তারিখগুলোতে পারচেজ কমিটির মিটিংয়ের মিনিটসের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী, প্রতিটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি’র মনিটরিং ফি প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিš‘ ট্রেজারার ইফফাত জাহান উক্ত আইনের তোয়াক্কা না করে গত ২০২০-২০২১ থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত মনিটরিং ফি প্রদান হতে বিরত থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো তিনি ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে যথাক্রমে (ক) ২০২০-২০২১ থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত ইউজিসি’র মনিটরিং ফি প্রদান হতে বিরত থাকেন, (খ) ২০১৭ থেকে ২০১৮ এবং ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমাদানে ব্যর্থ হন, (গ) গত ২০১৮ – ২০১৯, ২০১৯ – ২০২০, ২০২০ – ২০২১, ২০২১ – ২০২২, ২০২২ – ২০২৩, ২০২৩ – ২০২৪ পর্যন্ত ইউজিসিতে বাৎসরিক অডিটেড ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট প্রদান করা থেকে বিরত থাকেন। উল্লেখিত প্রতিটি কাজ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ধারা ৩৩ এর ৩ ও ৪৫ এর ২ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন হলেও এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে অদ্যবদি কোন আইনি ব্যব¯’া গ্রহণ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতসহ এসব অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ট্রেজারার ড. ইফফাৎ জাহান।

 

Facebook Comments Box
top-1

Posted ২:৪২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।